আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবিতে গতকাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আদিবাসী ফোরামের সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ। ছবি : কালের কণ্ঠ
সরকারের উদ্দেশে সন্তু লারমাকেন আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি
মেলেনি ৪০ বছরেও? নিজস্ব প্রতিবেদক পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু লারমা) সরকারের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে বলেছেন, কেন ৪০ বছর ধরে আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি উপেক্ষিত হয়ে আসছে? তিনি বলেন, '১৯৭২ সালে সংবিধান রচনার সময়ই পাহাড়ি নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা সংসদে এই দাবি জানিয়েছিলেন। কোনো গণতান্ত্রিক ও অসামপ্রদায়িক সরকারের পক্ষে দেশের ৪৫টি আদিবাসী জনজাতির প্রায় ৩০ লাখ মানুষের এই দাবি উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। কিন্তু আমরা ৪০ বছর ধরে এই দাবি প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন করছি।'
আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবিতে গতকাল শুক্রবার সকালে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত এক সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সন্তু লারমা এসব কথা বলেন। আদিবাসী ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশ থেকে বিপুলসংখ্যক আদিবাসী নারী-পুরুষ বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে অংশ নেয়। পরে একটি মিছিল বের হয়।
সমাবেশে সন্তু লারমা বলেন, 'সংসদে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার দাবি উপেক্ষার পটভূমিতে পাহাড়ে আমাদের সশস্ত্র সংগ্রাম চালাতে হয়েছিল। অবশেষে সরকার ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তি করলে সশস্ত্র সংগ্রামের অবসান ঘটে। কিন্তু সরকার নানা রকম ষড়যন্ত্র, টালবাহানায় পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন না করে কালক্ষেপণ করে চলেছে।' তিনি আরো বলেন, এ দেশে এত বছর হলো সাম্রাজ্যবাদবিরোধী, গণতান্ত্রিক ও অসামপ্রদায়িক চেতনার সরকার গঠিত হয়নি। তাই এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে আদিবাসীদের ওপর সীমাহীন নির্যাতন-নিপীড়ন চলছে।
আদিবাসীদের উদ্দেশে সন্তু লারমা বলেন, 'আমি বিশ্বাস করি না, এ দেশের শাসক-শোষকগোষ্ঠী এমনি এমনি আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে। তাই দাবি আদায়ে আগামীতে আপনাদের আরো সংগ্রাম চালাতে হবে। এ দেশের শাসকগোষ্ঠীর যে চরিত্র, তার বিরুদ্ধে আপনারা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হয়ে থাকবেন।'
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, 'আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি, একটি গণতান্ত্রিক দাবি। সরকারের উচিত হবে এই গণতান্ত্রিক দাবি মেনে নেওয়া।' তিনি ঘোষিত শিক্ষানীতি অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষায় আদিবাসীদের নিজ নিজ মাতৃভাষায় শিক্ষা লাভের সুযোগ সৃষ্টির জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বিশিষ্ট লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, '১৯৭২ সালে সংবিধান রচনার সময় এ দেশের আদিবাসী জনজাতিগুলোর কথা সংবিধান থেকে বাদ দিয়ে মহা ভুল করা হয়েছিল। আদালতের রায়ের পর বর্তমান সরকার সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। এখন সুযোগ এসেছে এই ভুল সংশোধনের।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, আদিবাসীদের কোন অভিধায় ডাকা হবে, তা এ দেশের আদিবাসীরাই নির্ধারণ করবে। সরকারের উচিত হবে না 'উপজাতি', 'ক্ষুদ্র নৃ-জাতিগোষ্ঠী' বা অন্য কোনো অভিধায় তাদের চিহ্নিত করা। নইলে শাসকগোষ্ঠী ইতিহাসের কাছে দায়ী থাকবে।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের গৌতম কুমার চাকমা, আদিবাসী ফোরামের শক্তিপদ ত্রিপুরা, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের রবীন্দ্রনাথ সরেন, সিপিবির মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, ওয়ার্কার্স পার্টির আনিসুর রহমান মলি্লক, গণফোরামের পঙ্কজ ভট্টাচার্য, বাসদের শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, অধ্যাপক এইচ কে এস আরেফিন, অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, লেখিকা মাসুদা ভাট্টি, কর্মজীবী নারীর শিরীন আখতার, অ্যাকশন এইডের ফারাহ কবির প্রমুখ।
মেলেনি ৪০ বছরেও? নিজস্ব প্রতিবেদক
আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবিতে গতকাল শুক্রবার সকালে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত এক সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সন্তু লারমা এসব কথা বলেন। আদিবাসী ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশ থেকে বিপুলসংখ্যক আদিবাসী নারী-পুরুষ বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে অংশ নেয়। পরে একটি মিছিল বের হয়।
সমাবেশে সন্তু লারমা বলেন, 'সংসদে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার দাবি উপেক্ষার পটভূমিতে পাহাড়ে আমাদের সশস্ত্র সংগ্রাম চালাতে হয়েছিল। অবশেষে সরকার ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তি করলে সশস্ত্র সংগ্রামের অবসান ঘটে। কিন্তু সরকার নানা রকম ষড়যন্ত্র, টালবাহানায় পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন না করে কালক্ষেপণ করে চলেছে।' তিনি আরো বলেন, এ দেশে এত বছর হলো সাম্রাজ্যবাদবিরোধী, গণতান্ত্রিক ও অসামপ্রদায়িক চেতনার সরকার গঠিত হয়নি। তাই এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে আদিবাসীদের ওপর সীমাহীন নির্যাতন-নিপীড়ন চলছে।
আদিবাসীদের উদ্দেশে সন্তু লারমা বলেন, 'আমি বিশ্বাস করি না, এ দেশের শাসক-শোষকগোষ্ঠী এমনি এমনি আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে। তাই দাবি আদায়ে আগামীতে আপনাদের আরো সংগ্রাম চালাতে হবে। এ দেশের শাসকগোষ্ঠীর যে চরিত্র, তার বিরুদ্ধে আপনারা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হয়ে থাকবেন।'
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, 'আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি, একটি গণতান্ত্রিক দাবি। সরকারের উচিত হবে এই গণতান্ত্রিক দাবি মেনে নেওয়া।' তিনি ঘোষিত শিক্ষানীতি অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষায় আদিবাসীদের নিজ নিজ মাতৃভাষায় শিক্ষা লাভের সুযোগ সৃষ্টির জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বিশিষ্ট লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, '১৯৭২ সালে সংবিধান রচনার সময় এ দেশের আদিবাসী জনজাতিগুলোর কথা সংবিধান থেকে বাদ দিয়ে মহা ভুল করা হয়েছিল। আদালতের রায়ের পর বর্তমান সরকার সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। এখন সুযোগ এসেছে এই ভুল সংশোধনের।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, আদিবাসীদের কোন অভিধায় ডাকা হবে, তা এ দেশের আদিবাসীরাই নির্ধারণ করবে। সরকারের উচিত হবে না 'উপজাতি', 'ক্ষুদ্র নৃ-জাতিগোষ্ঠী' বা অন্য কোনো অভিধায় তাদের চিহ্নিত করা। নইলে শাসকগোষ্ঠী ইতিহাসের কাছে দায়ী থাকবে।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের গৌতম কুমার চাকমা, আদিবাসী ফোরামের শক্তিপদ ত্রিপুরা, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের রবীন্দ্রনাথ সরেন, সিপিবির মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, ওয়ার্কার্স পার্টির আনিসুর রহমান মলি্লক, গণফোরামের পঙ্কজ ভট্টাচার্য, বাসদের শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, অধ্যাপক এইচ কে এস আরেফিন, অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, লেখিকা মাসুদা ভাট্টি, কর্মজীবী নারীর শিরীন আখতার, অ্যাকশন এইডের ফারাহ কবির প্রমুখ।
----------------------------