Why we want our voice to be heard?

Pages

Sunday, March 6, 2011

লংগদুর জঙ্গলে আশ্রিতরা ফিরতে পারেননি এখনো

লংগদুর জঙ্গলে আশ্রিতরা ফিরতে পারেননি এখনো

সাধন বিকাশ চাকমা, লংগদু থেকে ফিরে | তারিখ: ০৬-০৩-২০১১

রাঙামাটির লংগদু উপজেলার বগাচতর ইউনিয়নের শান্তিনগর ও রাঙ্গিপাড়া গ্রামে হামলা ও অগ্নিসংযোগের পর জঙ্গলে আশ্রয় নেওয়া আদিবাসীদের বেশির ভাগই এখনো নিজেদের ভিটেমাটিতে ফিরতে পারেননি। বর্তমানে অভাব-অনটন ও অসুস্থতার মধ্যে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর অভিযোগ, ৩০টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারপিছু মাত্র দুই হাজার টাকা ও ২০ কেজি চাল ছাড়া আর কোনো সাহায্য দেওয়া হয়নি। কাকপারিয়া জঙ্গলে ঘুরে আদিবাসীদের সঙ্গে কথা বলে এসব কথা জানা গেছে।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ওই হামলার পর ৪০টি পরিবার গৃহহীন হয়ে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে কাকপারিয়া জঙ্গলে আশ্রয় নেয়।
এর মধ্যে ১৫ পরিবার ভিটেমাটিতে ফিরে এলেও বাকি ২৫ পরিবার এখনো ফিরতে পারেনি বলে জানা গেছে।
আদিবাসীরা তাঁদের বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার জন্য বাঙালিদের দোষারোপ করেন। স্থানীয় আদিবাসী নীল কুমার চাকমা জানান, গুলছখালী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এরশাদ আলী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। এদিকে ফিরে আসা আদিবাসীদের বাড়িঘরগুলোতে আবারও হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে অমীয় কান্তি চাকমা (৫০) নামের এক আদিবাসী তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
সরেজমিনে কাকপারিয়া জঙ্গলে দেখা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন গাছতলা ও খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করে অর্ধাহারে-অনাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। শিশুসহ অন্তত ১০ ব্যক্তির অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে শান্তিদেবী চাকমা বলেন, ‘আমার ছেলে দুই সপ্তাহ হলো অসুস্থ, বনের লতা-পাতা দিয়ে চিকিৎ সা করাচ্ছি।’
বগাচতর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য রনু দীপক দেওয়ান জানান, যাঁদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁরা এখনো জঙ্গলে রয়েছেন। সরকারের কাছ থেকে সাহায্য পেলে এবং ঘর তৈরি করতে পারলে তাঁরা ফিরে আসবেন।
ক্ষতিগ্রস্ত সমররঞ্জন চাকমা জানান, বাঙালিদের ভয়ে এখনো মামলা করা যায়নি। মামলা না করার জন্য মুঠোফোনে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
অভিযুক্ত আবদুর রহিম হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘কিছু উচ্ছৃঙ্খল লোক সমঅধিকারের ব্যানারে ঘটনাটা ঘটিয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। আদিবাসীরাও বাজারে আসতে শুরু করেছে।’
লংগদু থানার এসআই (উপপরিদর্শক) মো. শাহাজান আলী বলেন, ‘আমরা আদিবাসীদের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখছি। এখনো কেউ অভিযোগ করতে আসেননি।’ তাঁর মতে, আদিবাসীরা বাজারে না আসায় মামলা করতে পারছে না। পরিস্থিতি ভালো হলে তাঁরা মামলা করবেন।
লংগদু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফজলে রাব্বী বলেন, ‘আমরা ৩০টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে দুই হাজার টাকা নগদ ও ২০ কেজি করে চাল সাহায্য দিয়েছি। পর্যায়ক্রমে আরও সাহায্য দেওয়া হবে।’  





-----------


No comments:

Post a Comment