পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তিতে ট্রাইব্যুনাল প্রস্তুত
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অনুযায়ী ওই অঞ্চলের ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তির জন্য গঠিত ভূমি কমিশন এখন ট্রাইব্যুনাল হিসেবে কাজ করার প্রস্তুতি শেষ করেছে। ভূমি কমিশনের একটি সভায় এই প্রস্তুতি সম্পর্কে আলোচনা হবে এবং তার পরই বিরোধের নিষ্পত্তি চেয়ে আবেদনকারীদের কাগজপত্রসহ ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে বলা হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশন ও সংশ্লিষ্ট সরকারি সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
যাঁরা এখনো আবেদন করেননি, তাঁদের আবেদনও গ্রহণ করবে ভূমি কমিশন। ভূমি কমিশনের পূর্ণ মেয়াদজুড়েই আবেদন গ্রহণ ও পর্যায়ক্রমে তার নিষ্পত্তির কাজ চলবে। প্রতিটি ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের রায় বা আদেশ অনুযায়ী স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় বৈধ মালিককে তাঁর ভূমির দখল বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
সূত্রগুলো জানায়, ২১ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ভূমি কমিশন ভূমিবিরোধ যথাসম্ভব দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার বিরোধ নিষ্পত্তির আবেদন কমিশনে জমা পড়েছে। এর মধ্যে দেড় থেকে দুই হাজার আবেদন শুনানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। ভূমি কমিশন ট্রাইব্যুনাল হিসেবে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর শুনানি গ্রহণ করে বিরোধ নিষ্পত্তির আদেশ দেবেন।
এই ট্রাইব্যুনাল বসার আগে ভূমি কমিশনের একটি বৈঠক অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণের জন্য আলোচনা চলছে, যেন কমিশনের সব সদস্য বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেন।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী গত শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তির কাজ দ্রুত শুরু করার জন্য কমিশন সচিবালয় যেসব কার্যক্রম গ্রহণ করেছে, কমিশনের একটি পূর্ণাঙ্গ বৈঠকে তা আলোচনার পরই ট্রাইব্যুনাল বসবে। বৈঠকের পর আবেদনকারীদের হাজিরার তারিখ দেওয়া হবে।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, কমিশনই ট্রাইব্যুনাল হিসেবে বসবে। সাক্ষ্য-প্রমাণ নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করবে। কমিশনের আদেশ অনুযায়ী যিনি যেটুকু ভূমির মালিকানা পাবেন, তাঁকে সরেজমিনে সেটুকু জমি মেপে দখল বুঝিয়ে দেওয়া হবে। দখল বুঝিয়ে দিতে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা দরকার হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বিচারপতি খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ও সংশ্লিষ্ট সবাই ট্রাইব্যুনালের সামনে হাজির হয়ে নিজ নিজ বক্তব্য পেশের সমান সুযোগ পাবেন। সবার জন্য এই সুযোগ সৃষ্টি করা কমিশনের আইনি বাধ্যবাধকতা ও দায়িত্ব। তিনি বলেন, প্রায় দুই হাজার আবেদন শুনানির জন্য প্রস্তুত আছে বলে কমিশন সচিবালয় তাঁকে জানিয়েছে। এই আবেদনগুলো দিয়েই শুনানি শুরু হবে এবং তা পর্যায়ক্রমে চলবে। একই সঙ্গে চলবে নতুন আবেদন গ্রহণ এবং তা শুনানির জন্য প্রস্তুত করার কাজও।
---------------------
courtesy: prothom-alo.
No comments:
Post a Comment