Why we want our voice to be heard?

Pages

Tuesday, November 30, 2010

 ত্রয়োদশ বার্ষিকী পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে আন্দোলনে নামবে জেএসএস 



ত্রয়োদশ বার্ষিকী

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে আন্দোলনে নামবে জেএসএস

অরুণ কর্মকার | তারিখ: ৩০-১১-২০১০


পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে আন্দোলনে যাচ্ছে জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)। আগামী ২ ডিসেম্বর ওই চুক্তি স্বাক্ষরের ত্রয়োদশ বার্ষিকীর দিনটিতে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আন্দোলনের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। সমিতির নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো এ কথা জানিয়েছে।
আন্দোলন সম্পর্কে জানতে চাইলে জেএসএসের সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা গতকাল সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, আগামী জানুয়ারিতে আন্দোলন শুরু করা হবে। কারণ, পার্বত্য চট্টগ্রামসমস্যার প্রকৃত রাজনৈতিক সমাধান ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।
আন্দোলনের প্রকৃতি কী হবে জানতে চাইলে সন্তু লারমা বলেন, নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে। তবে শেষ পর্যন্ত এর গতি-প্রকৃতি কী হবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। কারণ, সরকারের একটি মহলের প্ররোচনায় ইউপিডিএফ পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের পরিবেশ নষ্ট করছে। তিনি ইউপিডিএফকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
জেএসএসের আন্দোলনের প্রস্তুতি এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সরকার চুক্তি বাস্তবায়নের ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক। এ জন্য বাস্তবায়ন কমিটি ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যান নিয়োগ, শরণার্থী পুনর্বাসনবিষয়ক টাস্কফোর্স পুনর্গঠনসহ অনেক কাজ শেষ করেছে। এর মাধ্যমে চুক্তি বাস্তবায়নের মৌলিক কাজ শুরুর প্রেক্ষাপট সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় জেএসএসের উচিত সরকারকে আস্থায় নিয়ে চুক্তি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা। তা না হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বাস্তবায়ন আরও বিলম্বিত হতে পারে এবং সে জন্য জেএসএস দায়ী হবে।
এদিকে, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের ত্রয়োদশ বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য অনতিবিলম্বে সরকারের প্রতি নয়টি করণীয় সম্পাদনের দাবি জানিয়েছেন সন্তু লারমা। এগুলো হচ্ছে: চুক্তি বাস্তবায়নের সময়সূচিভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা অবিলম্বে ঘোষণা করা; পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন কার্যকর করা; পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ও আঞ্চলিক পরিষদের সুপারিশ অনুসারে ভূমি কমিশন আইন, ২০০১ সংশোধন করা; অচিরেই ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তির কাজ শুরু; অপারেশন ‘উত্তরণ’সহ পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনা, এপিবিএন, আনসার ও ভিডিপির সব অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহার; প্রত্যাগত জুম্ম শরণার্থী এবং অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু ও জনসংহতি সমিতির সদস্যদের যথাযথ পুনর্বাসন; পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ও চুক্তির অধীন আইনগুলোর সাংবিধানিক হেফাজতসহ দেশের আদিবাসী জাতিগুলোর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ভূমি অধিকারের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান; পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ও আঞ্চলিক পরিষদের ওপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে দায়ের করা আপিল মামলা আইনগতভাবে মোকাবিলার ওপর সরকারের পক্ষ থেকে গুরুত্ব দেওয়া; ইউপিডিএফ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা এবং এই সংগঠনের চুক্তিবিরোধী সব সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ; পার্বত্য জেলা পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ গ্রহণ এবং সে জন্য স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়ে ভোটার তালিকা বিধিমালা ও চেয়ারম্যান-সদস্যদের নির্বাচনী বিধিমালা প্রণয়ন করা।
গতকাল সকালে ঢাকার একটি হোটেলে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে সন্তু লারমা বলেন, প্রধানমন্ত্রীসহ অনেক মন্ত্রী-আমলা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে বর্তমান সরকারের আন্তরিকতার কথা বলে চলেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এসব কথা সাধারণ ঘোষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। পার্বত্য জনগণ এখন এ অবস্থার অবসান চায়।
সংবাদ সম্মেলনে গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য পংকজ ভট্টাচার্য, আদিবাসীবিষয়ক গবেষক অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, আদিবাসী ফোরামের সঞ্জীব দ্রং ও রবীন্দ্রনাথ সরেন, জেএসএসের শক্তিপদ ত্রিপুরা ও মঙ্গল কুমার চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি বাবলু চাকমা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 




No comments:

Post a Comment